জাবি ছাত্রলীগে বিদ্রোহের নেপথ্যে কি
৩০ জানুয়ারি, ২০২৪, 10:43 PM

NL24 News
৩০ জানুয়ারি, ২০২৪, 10:43 PM

জাবি ছাত্রলীগে বিদ্রোহের নেপথ্যে কি
ফয়জুল ইসলামঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বিক্ষোভ করেছে শাখা ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক কমিটির দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একটি সিন্ডিকেট নানাভাবে কমিটিকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত আছে। এছাড়াও সিন্ডিকেট নানা সময়ে কমিটির কাছে নানা সুবিধা দাবি করে। কখনো ক্যাম্পাসে চাকুরী, প্রকল্পের টাকার ভাগ, নিজেদের অনুসারীদের কমিটিতে পদ দেয়া, ইত্যাদি। সিন্ডিকেট এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য একটা গ্রুপ তৈরি করে। যারা নানা সময়ে কমিটির উপর প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। এসব কাজের সমন্বয় করেন সাবেক ছাত্র ও টিভি মিডিয়ার এক সাংবাদিক। এর পেছনে ছাত্রলীগের বিভিন্ন হলের ৫/৬ জন নেতা আগামী কমিটি এবং প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগির উদ্দেশ্যে করছে বলে ধারণা অনেকের। এদের মাঝে লেনিন মাহবুব যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এইচ হল চাঁদাবাজি এবং টেন্ডারবাজি নিয়ন্ত্রণ করে। কিছুদিন আগেই সাভার-আশুলিয়া রোডের লেগুনার চাঁদাবাজি,সিএন্ডবি মোড়ের মাদক নিয়ন্ত্রণ ও ক্যাম্পাসে ছিনতাই নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আসে লেলিনের নামে।
পত্রিকায় নিউজও হয়। চিন্ময় সরকার সাংগঠনিক সম্পাদক আল বেরুনী হলে অবস্থান শূন্য হলেও বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হতে এই বিদ্রোহী গ্রুপে সংযুক্ত হয়েছে। চিন্ময় সরকার নানা সময়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দামের নাম ব্যবহার করে জুনিয়রদের আয়ত্ত্বে নেবার চেষ্টা করছে। ইসলামনগর এলাকায় ডিস ব্যবসায়ী, বাজার কমিটি, ইন্টারনেট ব্যবসায়ী, ময়লা পরিষ্কারকারী, ও বিল্ডিং মালিকদের কাছে নানা সময়ে চাঁদা দাবি করে। এছাড়া জমি দখল, জমি ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে। আমবাগান ও ইসলামনগর এলাকায় মাদক ব্যবসাও চিন্ময়ের নির্দেশে হয়ে থাকে বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। অন্যদিকে সাজ্জাদ শোয়াইব চৌধুরী সহ-সভাপতি,আরাফাত ইসলাম বিজয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এদের হলে এবং ক্যাম্পাসে কোন অবস্থান না থাকায় প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগিতে বড় অঙ্কের টাকা পাবে বলে বিদ্রোহী গ্রুপে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিজয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী জেনারেটর এলাকার চাঁদাবাজি ও কর্মচারি কলোনীতে মাদক নিয়ন্ত্রণ করে। শুধু তাই নয় মোটা অঙ্কের টাকা চাঁদা নিয়ে হলের সামনে দোকান বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে রযেছে। অপর দিকে সাজ্জাদ শোয়াইব চৌধুরী এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করেছে।
কোন জায়গায় সমস্যা হলে তাকে সেখানে পাওয়া যায়,কিছুদিন আগেও এক বহিরাগত গাড়ি ক্যাম্পাসের এক শিক্ষার্থী পিছন থেকে মেরে দেয়।সেখান থেকে সাজ্জাদ টাকার মাধ্যমে তা সমাধান করে। কয়েক মাস আগে এই সাজ্জাদ হলের ঠিকাদার কে জিম্মি করে চাঁদা দাবী করে।টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।পরে সেই ঠিকাদার টাকা দিয়ে নিজের জীবন রক্ষা করে। মোঃ তৌহিদুল আলম তাকিদ অর্থ সম্পাদক কে আগামীতে সভাপতি হবার নিশ্চয়তা দিয়েছে বিদ্রোহী গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা। এই বিদ্রোহ সংগঠিত হবার পূর্বে তারা ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সাবেক কিছু নেতা এবং বর্তমান জাবি হতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এক উপ-সম্পাদকের ইন্ধনে নির্বাচন শেষ হতে না হতেই ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ বাঁধাতে বদ্ধ পরিকর।
এদের মূল লক্ষ্য ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক কে মিথ্যে অভিযোগে সরাতে পারলেই সভাপতি সোহলকেও ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করার পথ সুগম হবে।উল্লেখ্য এর আগেও ক্যাম্পাসে এমন আরেকটি সিন্ডিকেট মদদপুষ্ট গ্রুপ সভাপতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। পরে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের শক্ত ভূমিকায় ওদের অভিসন্ধি ভেস্তে যায়। এদিকে কেন ছাত্রলীগ সম্পাদকের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ এ বিষয়ে জানতে চাইলে, জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন জানান," আমার কিছু দোষ রয়েছে, তবে সেটি সংগঠনকে গতিশীল করতে আমি অনেককেই গালমন্দ করেছি। কিন্তু এটা আমার স্বার্থে না বরং সংগঠনকে ভাল রাখতে। আপনারা জানেন আমাদের কমিটি টা সিন্ডিকেটের বাইরে ছাত্রলীগের শত প্রাণের দাবিতে একটি সুসংগঠিত কমিটি বলে আজকের এমন ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র আর আজকে যারা বিদ্রোহ করেছে তাদের সম্বন্ধে আপনারা ভাল জানেন। আমি সেন্ট্রালকে জানিয়েছি এবং বলেছি আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করতে পারেন"। এবিষয়ে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান সোহেল বলেন, "যেকোন মূল্যে ক্যাম্পাসকে স্হিতিশীল রাখা হবে। আমরা সেন্ট্রালের পরামর্শে সকল সিদ্ধান্ত নিব"।