ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং : উপকূলে ৫-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর, ২০২২, 2:43 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৪ অক্টোবর, ২০২২, 2:43 PM
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং : উপকূলে ৫-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, সোমবার (২৪ অক্টোবর) মাঝ রাতে দেশের সাতক্ষীরা উপকূল থেকে বরিশাল উপকূলে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আঘাত করার সম্ভাবনা রয়েছে। আর জলোচ্ছ্বাস এদিন সন্ধ্যার পরে শুরু হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। আবাহওয়া অধিদপ্তর আশঙ্কা করছে, সিত্রাং উপকূল অতিক্রমের সময় চট্টগ্রাম, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, ঝালকাঠি, নোয়াখালী ও ফেনীর দ্বীপ এবং চরাঞ্চলগুলোয় জলোচ্ছ্বাস শুরু হতে পারে। এসব অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস ৫ থেকে ৮ ফুট উঁচু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া সিত্রাং অতিক্রমের সময় সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম উপকূল অঞ্চলগুলোয় ঘণ্টায় ৮০-১০০ কিলোমিটার বেগে দমকা থেকে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, সিত্রাং এখন দেশের দক্ষিণাঞ্চল বরিশালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এটি কেন্দ্রের ৫৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার। এছাড়া এটি ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে বাড়ছে। এছাড়া সাগর এখন উত্তাল। দেশের মোংলা ও পায়রা সমুন্দ্রবন্দরকে আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপৎসংকেত এবং চট্টগ্রাম, কক্সবাজারে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখানোর জন্য বলেছে। এদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এদিকে, আবহাওয়ার একটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও সামান্য উত্তর-উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এ পরিণত হয়ে পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। রোববার (২৩ অক্টোবর) দুপুরের পর থেকে ঘূর্ণিঝড়টি এগিয়ে এসেছে। এটি দুপুরে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ৭৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে ছিল, এখন সেটি ৭৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। একইভাবে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৭১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, এখন ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৭৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে, এখন ৭০০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ছিল ৬৯৫ কি.মি. দক্ষিণে, এখন ৬৭৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে। গভীর নিম্নচাপটির বর্ধিতাংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৪০ থেকে ৫০ কি.মি. বেগে দমকা অথবা ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।