গাছিরা জানান দিচ্ছে শীত আসছে
২৯ নভেম্বর, ২০২২, 4:24 PM

NL24 News
২৯ নভেম্বর, ২০২২, 4:24 PM

গাছিরা জানান দিচ্ছে শীত আসছে
|| সাত দিন পরেই পাওয়া যাবে খেজুরের রসের আস্বাধন
মীরসরাই প্রতিনিধি : গ্রাম বাংলার ঋতু পরিক্রমায় কার্তিক পেরিয়ে অগ্রহায়ন ছুঁই ছুই এখন। সারাদেশের গ্রামীন জনপদের পাশাপাশি চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার গ্রামীন জনপদে ও এখন কূয়াশা ঘেরা ভোর আর গোধিলীর বিকেলে গাঁয়ের তেপান্তরে দেখা যাচ্ছে গাছিদের তৎপরতা। গাছিদের ব্যস্ততাই যেন জানান দিচ্ছে শীত এসে গেছে সকলের দোরগোড়ায়। অবশ্য গ্রামের মানুষদের ইতিমধ্যে রাতে কাঁথা কম্বল নেয়ার পাশাপাশি শীতের কাপড় পরা শুরু করতে হচ্ছে বলেই লক্ষনীয়। মীরসরাইয়ে সর্ব দক্ষিন জনপদ সাহেরখালী ও তৎনিকটবর্তি বালিয়াদি- বগাচতর এলাকায় প্রতি বছর সারি সারি শত খেজুর গাছের রস এখনো গ্রামীণ ঐতিহ্যকে রক্ষা করেছে যেন। শীতের এই মৌসুম এলেই ধানচাল সহ অন্যান্য কাজ আগেভাগে সেরে বা কাজের রুটিন ভাগ করে প্রতি বছর ওরা অনেকে খেজুর গাছ থেকেই আয় করে বাড়তি কিছু উপার্জন।
বগাচতর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আলী আজম ( ৪২) ও তার বড় ভাই মাহবুব আলম ( ৫২) এবং কাকা আমজাদ হোসেন ( ৪৫ ) তিন জনে মিলে ওরা প্রায় ১১০টি খেজুর গাছে হাঁড়ি বসায় প্রতি বছর।বৃহস্প্রতিবার শেষ বিকেলে তাদের দেখা মিলল বেড়িবাঁধের উপরেই কোমরে ঝুড়ি বাঁধা, হাতে বাটাল আর রশি । আলী আজম বলল শীত পড়া শুরু হবে শীঘ্রই তাই খেজুরগাছগুলো তৈরি করে নিচ্ছি। মাথা পরিস্কার করে রসের থালি রেডি করে রাখলে শীত শুরু হলেই কাঠি বসিয়ে হাঁড়ি লাগাতে সুবিধা হবে। আর কদিন পরে রস পাওয়া যাবে জানতে চাইলে তিনি হিসেব করে বললেন, সপ্তাহখানেক পরই হাঁড়ি বসানো যাবে। প্রথম কদিন রস ভাল না ও হতে পারে। এক সপ্তাহ পর পর খাঁটি রসই পাওয়া যাবে আশা করছি। মঘাদয়িা উপকূলের আরেক গাছী রুস্তম আলী ( ৫২) বলেন আমি ৫০ টি গাছে প্রতিদিন গড়ে ২শত লিটার রস ও পাই। প্রতি লিটার রস ৪০ থেকে ৫০ টাকা করে প্রতিদিন হাজার তিনেক লাভ থাকে প্রায়। এতে প্রতি মৌসুমে লক্ষ টাকা করে বাড়তি আয় হয় আমার। বছরের অন্যান্য সময় কি কাজ করেন জানতে চাইলে অপর গাছী মাহবুব আলম ( ৫২) বলেন আমরা সাধারনত প্রান্তিক কৃষক। নিজের জমি আর বর্গা জমি চাষ করে থাকি। পাশাপাশি মৌসুমী সবজি, ধান, ইত্যাদি চাষাবাদ করি। খেজুর গাছে আমাদের বছরের মৌসুমী বাড়তি রোজগার। তবে আশংকার কথা হলো এই কৃষকদের সুদিন আবার দুর্দিনে রুপ নেয় কিনা। এই বেড়িবাঁধ যদি কখনো সরকার মেরিন ড্রাইভ সড়ক করা শুরু করলে হারিয়ে যাবে এই রসের হাঁড়ির উৎস। হারিয়ে যাবে ওদের বাড়তি আয়ের স্বপ্ন। আবার আগের দৈন্যদশায় পতিত হয় কিনা সেই আশংকা করছে সম্প্রতির বছরগুলোতে।এই বিষয়ে মীরসরাইয়ের কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন এখন থেকে গ্রামের অন্যান্য সড়কে ওরা খেজুর গাছ রোপন করে এই আশংকার লাঘব করতে পারে। সরকার ও এখন সকল প্রকার প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় আন্তরিক।