আমরা কি বিভ্রান্ত নাকি পথভ্রষ্ট জাতি
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 4:47 PM
NL24 News
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 4:47 PM
আমরা কি বিভ্রান্ত নাকি পথভ্রষ্ট জাতি
কে. হোসাইন: এই দেশ আমাদের সকলের আমরা এই দেশের সাধারণ জনগণ অর্থহীন বা ক্ষমতাহীন বলে নিশ্চই কোন রাজনীতিক দল বা গোষ্ঠীকে আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করার অধিকার দেইনি। আমরা বিভ্রান্ত হই তখন, যখন কেউ বলেন ১৯৭১ এর যুদ্ধ ছিল মুক্তিযুদ্ধ আবার কেউ বলেন ভারত - পাকিস্তান যুদ্ধ। কেউ বলেন ৩ লাখ শহীদ আবার কেউ বলেন ৩০ লাখ শহীদ! কেউ বলেন আমার বাপেই সব কিছু আবার কেউ বলেন আমার স্বামীই সব কিছু! যখন করো মানসিক বিবেচনায় ভারতপন্তিরা রাজাকার আবার কারো বিবেচনায় পাকিস্থানপন্থীরা রাজাকার খেতাব পায়!
আজ ভাবতে অবাক লাগে, আমাদের এত গুনি ব্যক্তি এত বিশ্ব স্বীকৃত অর্জন থাকতেও মানসিক ভাবে আমরা কতটা পিছিয়ে আছি! মাঝে মাঝে মনেহয়, আমরা কোন এক পঙ্গু রাজনৈতিক মতাদর্শের দেশে জন্মগ্রহণ করেছি! যে দেশে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও শুনতে হয় স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে ভিন্ন মত ও ভিন্ন কথা!?
সব থেকে দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ১৯৭১ ইং সাল হতে ২০২৪ ইং সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনাকারীদের বীভৎস অপকর্ম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করা এবং ভিন্ন মতাদর্শের ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী দমন পীড়নের কুৎসিত চরিত্র যখন সবক্ষেত্রে দৃশ্যমান হয়। আরো বেশি বিপদজনক বিষয় হচ্ছে, কোননা কোন উপায়ে কেউনা কেউ এই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হয়ে যাচ্ছে এবং সাধারণ জনগনকে আশা ভরসার চলচিত্র দেখিয়ে নীরব প্রতারণার মাধ্যমে জনগণকে জিম্মি করে জনগণের ঘাড়ের উপর বসে নিজেদের আখের গোছানোর সর্বাত্মক পরিকল্পনা ও চেষ্টা বাস্তবায়ন করা হয়েছে!
কিন্তু স্রষ্টার চাইতে শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকরি কে?? আপকর্মকারীদের সর্বশেষ পরিণতিতে দেখাগেছে, জনরোষের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া, আত্মগোপনে যাওয়া, জেলে যাও অথবা বিরোধী কর্তৃক হত্যার মুখোমুখি হয়ে মৃত্যু সথে আলিঙ্গন করা! যা আজ সর্বসাধারণের কাছে দৃশ্যমান ও প্রমাণিত।
বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমি মনেকরি, বাংলাদেশ সৃষ্টির সূত্রপাত, স্বাধীনতা যুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদদের নিয়ে নিম্নমানের রাজনৈতিক ধুম্রজাল সৃষ্টিকরা বন্ধ হওয়া উচিত। বন্ধ হওয়া উচিত ভারত বা পাকিস্থানি কতৃত্ববাদী সবধরনের জঘন্য রাজনীতি।
কারণ, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ইতিহাসের সাথে এই দেশের প্রতিটি নাগরিক এবং রাষ্ট্রের সন্মান জড়িত। প্রকৃত অর্থে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সঠিক পথে নিতে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস নিয়ে সকলপ্রকার মিথ্যাচার বন্ধ করা একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয় এবং দেশপ্রেমের প্রথম পরিচয় বলে মনেকরি।
নাগরিক হিসেবে আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে আশাকরি, সকল প্রকার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের প্রকৃত ইতিহাস ও জনগণের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে দলমত নির্বিশেষে সার্বিক যুক্তি প্রমানের সাথে।
সেই সাথে নির্ধারিত হবে বিরঙ্গনা মা-বোন, শহীদ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যা। আশাকরি এইদেশের সরকার যে মতাদর্শেই পরিচালিত হোক, কিন্তু স্বাধীনতার ইতিহাস, সংবিধান এবং ভবিষ্যৎ দেশ পরিচালনা হতে হবে সর্ব দলীয় এবং মানসম্মত। কারণ, নিরীহ নাগরিক দৃষ্টিতে সবকিছুর ঊর্ধ্বে গুরুত্বপুর্ন হচ্ছে দেশপ্রেম, দল মত নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিক স্বার্থ রক্ষা, স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস এবং স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের সন্মান রক্ষা করা।