ঢাকা ২৮ জুলাই, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
দৌলতখান উপজেলার কৃষি অফিসার হুমায়রা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে ৬০ হাজার সেনাসদস্য এনসিপির সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করলেন নীলা ইস্রাফিল তাসকিনের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ, থানায় সাধারণ ডায়েরি নির্বাচনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে ট্রেনিং দেওয়া হবে: প্রেস সচিব ১০ শহীদসহ আরও ১৭৫৭ জন জুলাই যোদ্ধার গেজেট প্রকাশ ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক থেকে বিএনপির ওয়াকআউট, পরে যোগদান হাতিয়ায় ট্রলারে বাল্কহেডের ধাক্কা, নিহত ২ জুলাই সনদকে একটি ঐতিহাসিক দলিল বানাতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ ব্যাংককের মার্কেটে এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত ৬

আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ঘোষণা আসতে পারে নির্বাচনের দিনক্ষণের

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৮ জুলাই, ২০২৫,  11:25 AM

news image

আগস্টের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। গণ–অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিকে ঘিরে প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণের মাধ্যমে এই ঘোষণা দিতে পারেন বলে সরকারের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ফেব্রুয়ারিতে ভোট আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে অনুরোধ করা হবে। এ–সংক্রান্ত বার্তা আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই ইসির কাছে পৌঁছাবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ ৫ আগস্টের মধ্যে ঘোষণা করা হবে—এ বিষয়টিও এখন প্রায় নিশ্চিত। এরই মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সনদের একটি খসড়া প্রস্তুত করেছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফা আলোচনা ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করবে। রোববার সকালে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনার শুরুতে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, সোমবারের মধ্যে সনদের খসড়া দলগুলোকে পাঠানো হবে। আলোচনার একটি দিন নির্ধারণ করে সই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। তিনি আরও বলেন, খসড়া সনদ নিয়ে সংলাপে আলোচনা হবে না। যদি বড় ধরনের মৌলিক আপত্তি ওঠে, তবেই আলোচনা হবে। সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত যুক্ত করে একটি প্রাথমিক রূপ দেওয়া হবে, যেখানে পটভূমি ও অঙ্গীকার থাকবে।

আলোচনায় নির্বাচনের দিনক্ষণ

গত ১৩ জুন লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠক শেষে যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে ২০২৬ সালের রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সে সময়ের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের অগ্রগতি থাকতে হবে।

তবে বৈঠকের ঘোষণা অনুযায়ী সরকারের তরফে নির্বাচনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় বিএনপির নেতাদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়। বিশেষ করে ইসিকে এখনো স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না দেওয়ায় সন্দেহ–অবিশ্বাস আরও বেড়ে যায়। এদিকে কিছু রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাবও তুলেছে, যা বিএনপি সন্দেহের চোখে দেখছে।

সবশেষ ২২ জুলাই থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তিন দফায় বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। এর মধ্যে ২৬ জুলাই তিনি ১৪টি দল–জোটের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, আগামী চার–পাঁচ দিনের মধ্যেই নির্বাচনের সময়সীমা ও তারিখ ঘোষণা করবেন।’ তার মতে, এই বিষয়টিই আলোচনার সবচেয়ে ফলপ্রসূ অংশ।

বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের অন্যতম শরিক ১২ দলীয় জোটের সমন্বয়কারী মোস্তফা জামাল হায়দারের এই বক্তব্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার বিষয়টি আবারও আলোচনায় এসেছে।

তবে ২৬ জুলাইয়ের বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং যে বিবৃতি পাঠায়, সেখানে তারিখ ঘোষণার কথা উল্লেখ না থাকলেও নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। তিনি বলেন, কিছু ‘পতিত শক্তি’ নির্বাচন ভণ্ডুলের চেষ্টা করছে এবং সব ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

দলগুলোর প্রতিক্রিয়া

নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণাকে বিএনপি ইতিবাচকভাবে দেখছে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দুই–চার দিনের মধ্যে যদি নির্বাচনের সময় ঘোষণা করেন, খুশিই হব। কারণ, এটাই তো আমাদের দাবি।’

তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। জামায়াতে ইসলামী নেতার সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করার আগে সংস্কার ও গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হওয়া জরুরি। তা না করে এখনই তারিখ ঘোষণা করা হলে সেটা হবে জুলাইয়ের চেতনাকে উপেক্ষা এবং একধরনের অপরিপক্বতা।’

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘আগামী চার–পাঁচ দিনের মধ্যে যদি জুলাই সনদ চূড়ান্ত হয়, তাহলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা নিয়ে আমাদের আপত্তি থাকবে না।’

বিভিন্ন দল মনে করছে, জুলাই সনদ চূড়ান্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সে জন্য সরকার নির্বাচনের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সুনির্দিষ্টভাবে আশ্বস্ত করতে চাইছে। সূত্র : ইত্তেফাক 

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম