রাশিয়ার ১৩৫ ট্যাংকারের ওপর যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ জুলাই, ২০২৫, 10:50 AM

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ জুলাই, ২০২৫, 10:50 AM

রাশিয়ার ১৩৫ ট্যাংকারের ওপর যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা
রাশিয়ার জ্বালানিখাতের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। সোমবার দেশটির তথাকথিত ‘ছায়া নৌবহর’ লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাজ্য, যার মধ্যে রয়েছে ১৩৫টি তেলবাহী ট্যাংকার ও দুটি রুশ কম্পানি—তেল ব্যবসায়ী লিটাস্কো মিডল ইস্ট ডিএমসিসি ও শিপিং সংস্থা ইন্টারশিপিং সার্ভিসেস এলএলসি। 'ছায়া নৌবহর' বা 'শ্যাডো ফ্লিট' বলতে গোপন বা গোপন নৌ বহরকে বোঝায়। যেগুলো আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা এড়িয়ে অবৈধ বা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকে। তবে রাশিয়ার ক্ষেত্রে তাদের তেল রপ্তানিকারী জাহাজগুলোকে বোঝায়। রাশিয়ার জ্বালানি ও তেল খাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই ট্যাংকারগুলো। ব্রিটিশ সরকার জানিয়েছে, এই জাহাজগুলো ২০২৪ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহন করেছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি জানিয়েছেন, এই নতুন নিষেধাজ্ঞা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের তথাকথিত ‘ছায়া নৌবহর’কে আরও ‘বিচ্ছিন্ন’ করে ফেলবে এবং রাশিয়ার যুদ্ধ তহবিলের মূল উৎস—তেলের রাজস্ব হ্রাস করবে। যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, জাহাজ নথিভুক্ত করার দায়িত্বে রয়েছে ইন্টারশিপিং সার্ভিসেস এলএলসি গ্যাবনের পতাকার আওতায়, যার মাধ্যমে তারা রুশ রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বছরে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য পরিবহন করতে সক্ষম হয়। এছাড়া বড় পরিসরে রাশিয়ার তেল পরিবহন অব্যাহত রাখার জন্য লিটাস্কো মিডল ইস্ট ডিএমসিসি কম্পানির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। এদিকে, এই নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি লন্ডনে অবস্থিত রুশ দূতাবাস। তবে মস্কো এর আগে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলোকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে এসব পদক্ষেপ। ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে এর আগে গত শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজে সম্মত হয়েছে, যাতে রাশিয়ার তেল ও জ্বালানি শিল্পে আরেক দফা আঘাত হানার পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই প্যাকেজের অংশ হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য মিলে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেলের দামের সীমা ব্যারল প্রতি ৬০ ডলার থেকে কমিয়ে ৪৭.৬০ ডলারে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যাতে রাশিয়ার তেল রাজস্বে বিঘ্ন ঘটানো যায়। এদিকে সামরিক মঞ্চে এখনও অব্যাহত রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ। ইউক্রেনের কামিয়ানস্কে, দেহতিয়ারনে আর পোপিভ ইয়ার দখলের দাবি করে রাশিয়া। একইসঙ্গে ক্রিমিয়া, ব্রায়ানস্ক আর মস্কোসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ৭৩টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করার কথা জানায় মস্কো। ফ্রন্টলাইনে পরীক্ষামূলক অস্ত্র ব্যবহারে সবুজ সংকেত দিয়েছে ইউক্রেন। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা ইউক্রেনীয় ড্রোন কিনতে পারে। যার বিনিময়ে কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করবে। নিজস্ব অস্ত্র উৎপাদনও ৪০ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর সিদ্ধান্তের সরাসরি সমালোচনা করেছে মস্কো। পাশাপাশি রুশ পার্লামেন্ট একটি বিল পাস করেছে। যেখানে ইউক্রেনের পক্ষে গান, পোস্ট কিংবা কন্টেন্ট প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিধান রাখা হয়েছে। সূত্র : রয়টার্স, মস্কো টাইমস।