ঢাকা ১৯ এপ্রিল, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
চুয়াডাঙ্গায় হিট এলার্ট জারি অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাতে দুবাইয়ে দুদিনে ১২৪৪ ফ্লাইট বাতিল বিএনপি এখনও টার্গেটে পৌঁছাতে পারেনি : রিজভী মন্ত্রী-এমপিদের সন্তানেরা ভোট করতে পারবে না পরীমণিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি সয়াবিন তেলের দাম নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নাশকতার মামলায় বিএনপি নেতা হাবিব-দীপক কারাগারে নবীনগরে ফসল কর্তন উৎসব ও কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত সরাইলে দু’পক্ষের ৩ ঘণ্টা সংঘর্ষ, আহত ৫০ বনশ্রীর আবাসিক ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

“বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও বিএনপির অপরাজনীতি”

#

১৫ মে, ২০২৩,  2:57 PM

news image

-অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া-


জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের ক্ষমতা স্থায়ী দখলে নেন জেনারেল জিয়া। নীতি হীনতাই যদি দূর্নীতির সঙ্গা হয় তাহলে জিয়ার ক্ষমতা দখল ছিল স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় দূর্নীতি। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনারেল জিয়া হত্যাকারীদের বিচার না করে উল্টো ইনডেমনিটি অরডানেন্স জারি করে খুনিদের দেশের বাহিরে চলে যেতে সাহায্য করেছিলেন। তাহলে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে বিএনপির জন্মই হয়েছে মূলত দূর্নীতি,হঠকারিতা আর অপরাজনীতির মাধ্যমে। জিয়ার মৃত্যুর পর একদিকে জাতীয়তাবাদ প্রচার করে কিšদ দেশের ভেতরে সেই ক্যানটনমেন্টের চিন্তা ভাবনা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বেগম জিয়া। বেগম জিয়ার এই অসাধারণ দূর্নীতিআর  অপরাজনীতি এদেশের জনগন খুব সহজেই টের পেয়ে যান। বিএনপি শুধু দূর্নীতি করে ক্ষান্ত হননি। বরং, দূর্নীতিতে দেশকে পাঁচ পাঁচ বার চ্যামপিয়ন করেছিলেন। যার জন্য বিএনপি জামায়াতের েেজাট সরকারের পতনের পর দেশে দূর্নীতিগ্রস্থ দলকে এদেশের মানুষ আর ফিরিয়ে আনেননি। দূর্নীতি করে আর স্বাধীনতাবিরোধী রাজনীতি করে বিএনপির মন ভরেনি। তারা একে একে অপরাজনীতির সংস্কৃতি চালু করেছে। বর্তমানে তাদের অপরাজনীতি এমন জায়গায় গিয়ে পৌছেছে যে, তারা এখন দলীয় চেয়ারপারসনের অসুস্থতা নিয়েও অপরাজনীতিতে ব্যস্ত। জেনারেল জিয়া অসুস্থ হওয়ার পর বিএনপির দায়িত্ব পালন করেন বেগম জিয়া। বেগম জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে ১৯৯০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তেমন কোনো দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা লক্ষ করা যায়নি, যেই অসুস্থতার জন্য তাকে দেশের বাইরে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা নেয়া যেতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা হলো বিএনপি থেকেই এমন কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বেগম জিয়ার অসুস্থতার জন্য। ২০১৮ সালে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বেগম জিয়ার ৫ বছরের জেল হয়। তারপর ২ বছর জেলে থাকার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ মানবতা দেখিয়ে বেগম জিয়াকে বাসায় থাকার ব্যবস্থা করে দেন। একদিকে বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়েছেন আর অন্যদিকে বেগম জিয়াকে নিয়ে বিএনপি অপরাজনীতির নতুন খেলা শুরু করেছে। বেগম জিয়া জেলে যাওয়ার পরই অসুস্থ হওয়ার অভিনয় শুরু করেন। যার ফলে তাকে দীর্ঘদিন যাবৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করা হয়। একদিকে বেগম জিয়ার অসুস্থতার অভিনয় অন্যদিকে বিএনপির অপরাজনীতি চলতে থাকে। যা দেশের মানুষের বিবেককে লাড়া দেয়। বিএনপির অপরাজনীতির পরেও জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়েছেন। বেগম জিয়াকে জেলে থাকার বদলে বাসায় থাকতে ব্যবস্থা করে দেন। বাসায় থেকে সকল ধরনের চিকিৎসা নেয়ার ব্যবস্থা করে দেন। পৃথিবীর অন্য কেনো দেশে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে জেলের বদলে বাসায় থাকতে দেয়ার নজির নেই। একমাত্র জননেত্রী শেখ হাসিনার মানবতার কারনেই বাংলাদেশে এমন উদাহরণ তৈরি করতে পেরেছে। বেগম জিয়া যে সুযোগ সুবিধা পাওয়ার পরেও বিএনপি থেকে বারবার অসুস্থতার কথা বলে বেগম জিয়াকে দেশের বাহিরে নেয়ার দাবী করে আসছেন। অথচ সাজা হওয়ার আগেও তিনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন। জেলে যাওয়ার পর তাকে

সম্পুর্ন নিরাপত্তা ও চিকিৎসা বলয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে। মূলত বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি এক অপরাজনীতির খেলা শুরু করেছেন। বিদেশিদের কাছে নালিশ করে যাচ্ছেন। বিএনপি অগণতান্ত্রিক বিচ্ছিন্ন একটি দল। প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে যারা অপরাজনীতি করে আসছে তাদের দ্বারা মূলত দেশের উন্নয়ন সম্ভব না। বিএনপির এরকম অপরাজনীতি চর্চা করে দেশের মানুষের মন জয় করা যায়না এটা যদি তারা বুঝতো তাহলে দলের চেয়ারপার্সনকে নিয়ে অপরাজনীতি করতো না। দেশে এক সুস্থ গনতান্ত্রিক দ্বারা বজায় রেখেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির এসব পছন্দ না। তারা চায় এই দেশ আবার পাকিস্তান হোক। বিএনপি এখন নালিশ পার্টি তে পরিনত হয়েছে। যে দলের প্রতিষ্ঠা হয়েছে ক্যানটনমেন্ট থেকে তাদের মাথায় অপরাজনীতি ছাড়া অন্য কিছু না আসাটাও স্বাভাবিক। তাদের আরেক নেতা বেগম জিয়ার বড় ছেলে দূর্নীতি দায়ে অভিযুক্ত। তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। বেগম জিয়া মিজেও চেয়েছিলেন দেশের বাহিরে চলে যেতে। বেগম জিয়া দেশের বাহিরে যাওয়া নিয়ে বিএনপি যে অপরাজনীতি করে আসছে তা আজ

দেশের মানুষের কাছে আয়নার মতো পরিষ্কার। বাস্তবতা হলো বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়েও বিএনপি অপরাজনীতি করতেছেন। যা এদেশের জন্য লজ্জাজনক। নির্বাচনে সাফল্য পাবে না জেনে বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে। বিএনপিকে নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ভীতি পাওয়া স্বাভাবিক, কারণ ২০০৮ সালে বিএনপি সর্বশক্তি প্রয়োগ করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ৩০০ আসনের মধ্যে মাত্র ২৯টি আসন পেয়েছিল। পরে উপনির্বাচনে তারা ৩০টি আসন অতিক্রম করতে পেরেছে। ২০১৪ সালে তারা নির্বাচন বর্জন করেছিল। আর ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দলের ঐক্য গড়ে ড. কামাল হোসেন সাহেবের মতো মানুষকে হায়ার করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নারী আসনসহ মাত্র ৭টি আসন পেয়েছিল। বিএনপি তাদের জনপ্রিয়তা সম্পর্কে জানে, নির্বাচনে সাফল্য কতটুকু হতে পারে সেটি জানে, সেজন্য তাদের নির্বাচনী ভীতি পেয়ে বসেছে। ফলে ষড়যন্ত্রের পথেই হাঁটছে তারা। এই ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করলে এটা স্পষ্ট হয়, বিএনপির লক্ষ্য রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করা ও বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত করা। তবে দলটি এবং তাদের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্য এবং খাসলত দেশের মানুষ হাড়ে হাড়ে চেনে, জানে। ইতিমধ্যে তাদের মুখোশ খুলে গেছে দেশবাসীর সামনে। জনসমর্থন ‘শূন্য’ এর নিচে নেমে গেছে তাদের। আর তাই জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতে নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে বিএনপি। যার অংশ হিসেবে আপাতত তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় না গিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। দেশে মানবাধিকার নেই, রাজনৈতিক কর্মসূচি করা যাচ্ছে না, বাকস্বাধীনতা নাই- এসব দাবি করছেন বিএনপি নেতারা বাকস্বাধীনতার সর্বোচ্চ বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে পত্রিকায় এবং গণমাধ্যমে বিবৃতি ও কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে। আমরা বিএনপির কাছ থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করি। রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও গুজব না ছড়িয়ে তাদের আসন্ন নির্বাচনের জন্য প্রতি নেওয়ার আহ্বান জানাই। সাংবিধানিক পন্থায় একমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রক্ষমতার পরিবর্তন হতে পারে।

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম