ঢাকা ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
অবশেষে রাজধানীতে প্রশান্তির বৃষ্টি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকবে না: কাদের প্রতি লিটারে ১০ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী মার্চে ৬২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫০ আইপিএল: ছুটি বাড়ল মোস্তাফিজের বিরাজমান তাপপ্রবাহ নিয়ে স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অফিস শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় জামিন পেলেন ড. ইউনূস

সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল

#

০৩ মে, ২০২৩,  4:41 PM

news image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া


জঙ্গিবাদ আর সন্ত্রাসবাদ বর্তমানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্য বিষয়। পূর্বে জঙ্গিবাদ খুবই কম ছিলো। এখন প্রযুক্তির উন্নয়ন ও নানাবিধ অপপ্রচার জঙ্গিবাদকে উস্কে দিচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে গোষ্ঠীস্বার্থ টিকিয়ে রাখার জন্য বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গ্রুপ তৈরি হচ্ছে। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ বেড়েই চলছে। সেখানে বাংলাদেশের গ্রাফ   ক্রমহ্রাসমান। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক দ্যা ইনস্টিটিউটের অব ফর ইকোনোমিকস এন্ড পিস এর প্রকাশিত এক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। রিপোর্ট অনুসারে বাংলাদেশ  সন্ত্রাস দমনে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সফল রাষ্ট্র।

বাংলাদেশ পাকিস্তান, ইন্ডিয়া, শ্রীলংকা এমনকি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্েেরর থেকেও এগিয়ে। ইনডেক্স এর তথ্য অনুসারে আফগানিস্তান সন্ত্রাসবাদ সূচকে  তালিকার প্রথম,পাকিস্তান ৬ষ্ঠ, ভারত ১৩তম, যুক্তরাষ্ট্র ৩০তম, যুক্তরাজ্য  ৪২তম এবং বাংলাদেশ ৪৩তম  স্থানে রয়েছে। যেখানে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে বাংলাদেশের অবস্থা খুব খারাপ ছিলো। বাংলাদেশ ২০০৫ সালে বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে অত্যন্ত বিপদজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে যেখানে একটি সন্ত্রাসবাদী গ্রুপ জামিয়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)একযোগে ৬৩ টি জেলায় ৩০ মিনিটে  ৪৫৯টি সিরিজ বোমা নিক্ষেপ করে। বাংলাদেশ ২০০৪ সালে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার মতো বিভৎস ঘটনা  তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রীর সভায় সাক্ষী হয়। এতেই প্রতীয়মান হয় বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে সন্ত্রাসবাদের পরিস্থিতি। 

 যেখানে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ২২ তম অবস্থানে ছিলো যা ২০২৩ এ ৪৩তম অবস্থান। যাইহোক  বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশসহ যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চেয়ে এগিয়ে এটা ব্ংালাদেশের জন্য ইতিবাচক। বাংলাদেশে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে সন্ত্রাসদমনে অনেক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নিয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার সন্ত্রাসদমন আইন পাশ করেছে এবং অন্যান্য সহায়ক আইন সংস্কার করেছে। যেখানি বিএনপি জামায়াত সরকারের আমলে হিন্দুদের মন্দির, খ্রিস্টানদের গীর্জা, বুদ্ধদের  উপাসনালয়, লেখক, বুদ্ধিজীবী, ব্লগার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও মানবাধিকার কর্মীদের উপর আক্রমণ পরিলক্ষিত হয়। যদিও হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় আক্রমণনের মতো কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা দেখা যায়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সন্ত্রাসদমনে বদ্ধ পরিকর। তারা দেশ বিদেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষন নিয়ে দেশের সন্ত্রাসদমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলছে।আর মূলে রয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের সন্ত্রাসবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি। বর্তমান সরকার  আটটি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জেএমবি, শাহাদাত ই আল হিকমা, হিজবুত তাহরীর, হুজি বি, এবিটি, আনসার আল ইসলাম, আল্লাহর দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

শেখ হাসিনার কঠোর নীতির কারনে সন্ত্রাসবাদ হ্রাসকরনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা লক্ষনীয়।সরকার সন্ত্রাসদমনে গঠন করেছে এন্টি টেররিজম অ্যাক্ট,পুলিশের  সন্ত্রাস দমন ইউনিট, পুলিশের সাইবার তদন্ত কেন্দ্র, পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর বিশেষ নিরাপত্তা তদন্ত ইউনিট।বিশেষ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাস দমনে এলিট ফোর্স র্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই বাহিনীর ভূমিকা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। কিন্তু বিএনপি জামায়াত জোটের ষড়যন্ত্রের কারনে যুক্তরাষ্ট্রের এই বাহিনীর সদস্যের প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা অপ্রত্যাশিত ও অনভিপ্রেত। তাই আমাদের প্রত্যাশা যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসদমনের সহায়ক শক্তি র্যাবের  উপর নিষেধাজ্ঞা অচিরেই তুলে নিবে। রাষ্ট্রের সকল বাহিনীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়  এখন সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গিবাদ প্রায় নির্মূল হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।

শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব ও কার্যকরী পদক্ষেপ ও শক্তিশালী নীতির কারনে  সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে আবিভূত হয়েছে।সন্ত্রাসদমনে ক্রমহ্রাসমান সফলতা বৈশ্বিক দরবারে  বাংলাদেশের মান  বৃদ্ধি করছে ও সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। সম্প্রতি জার্মানির পার্লামেন্টে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছে। এমনকি বিশ্ব এন্টি টেররিজম সংগঠনের মিটিং এক বক্তা শেখ হাসিনার সন্ত্রাসদমনে শেখ হাসিনার জিরো টোলারেন্স নীতিকে বিশ্ব শান্তি রক্ষার অনন্য দৃষ্টান্ত ও রোল মডেল হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।এমনকি বিভিন্ন সময় দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদে জর্জরিত দেশকে বাংলাদেশের মতো নীতি গ্রহনে উদ্ভুদ্ধ করছে।

সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতি অল্প সময়ে যেহারে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা প্রশসংসার দাবীদার। বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাসবাদ দমনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা সন্ত্রাসবাদ দমনে কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। পরিশেষ বলবো দেশের শান্তি,  শৃংখলা ও উন্নয়নে সন্ত্রাসবাদ দমন করে কার্যকর ভূমিকা শেখ হাসিনা কখনো পিছনে ফিরে তাকাবেন না। সম্প্রতি বিএনপি জামায়াত জোট সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে সন্ত্রাসবাদকে উসকানি দেওয়ার পায়তারা করছে যেটা দেশ ও জাতির জন্য ভয়ানক লজ্জার। আর এমন অনভিপ্রেত কিছু ঘটলে গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও দেশের স্বার্থে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অতীতের ন্যায় কঠোর হস্তে দমন করবে বলে আশাবাদ রাখি।

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম