ঢাকা ২৯ মার্চ, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
রংপুর স্নেহা নার্সিং কলেজে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কাল ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না: ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় নোঙ্গররত ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪ সরকার সারাদেশে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে : মির্জা ফখরুল জিম্মি জাহাজ উদ্ধার প্রসঙ্গে যা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেপ্তার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপকে গুলি করে হত্যা বরিশালে মসজিদে আগুন ত্রিশালে বাস চাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

বিএনপি এখনো স্বাধীনতা বিরোধীদের আশ্রয়স্থল

#

৩০ মার্চ, ২০২৩,  3:39 PM

news image

|| অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া || 

স্বাধীনতা অর্জন অপেক্ষা তার গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য রক্ষা করা বেশ দুর্বার। লাখো বাঙালির আত্মত্যাগ ও অপরিমেয় দেশপ্রেমের এক দৃষ্টান্ত অর্জন আমাদের এই স্বাধীনতা যার মহানায়ক ও স্বাধীনতার আলোর বার্তাবাহক সহস্রাব্দের শ্রেষ্ঠ বীর ও একনিষ্ঠ বাঙালি জাতির কর্ণধার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যার নের্তৃত্বে আমরা দেখতে পেয়েছি স্বাধীনতার রক্তিম উদীয়মান সূর্য, পেয়েছি নিজ স্বাধীন আশ্রয়স্থল বাংলাদেশ।  সুদূর ইংরেজ আমল থেকে বাঙালি জাতি বার বার শোষণের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও তৎপর ছিল। সেই সময় থেকেই আমাদের মনে স্বাধীনতার বীজ বপন করা হয়েছিল, যার ফলপ্রসূত বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ছয়দফা কর্মসূচি, গণঅভ্যুত্থান এবং রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তিযুদ্ধ।

বাঙালীর সকল স্বাধীনতা আন্দোলনেই পরাশক্তির দল হাজারো বাঁধা ও কালো বিভীষিকা নিয়ে হাজির হয়েছে। তারা বাঙালীর স্বাধীনতা অর্জনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে বার বার। মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই অগ্নিঝরা মার্চের দৃঢ় বক্তব্যর উপর আস্থা রেখে আমরা প্রাণপণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম আমাদের স্বাধীনতা অর্জনে। সেই সময় থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী, দেশ বিরোধী ও অপসংস্কৃতির বাহক বিএনপি স্বাধীনতার বিরোধিতা করে আসছে। তারা পাকিস্তানি পরাশক্তির সাথে জোট স্থাপন করে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথ করে তুলেছিল কন্টকময়। বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় এখনও স্বাধীনতাবিরোধীরা এদেশে রাজনীতি করছে। স্বাধীনতার সফল সোনালী পঞ্চাশ বা তার অধিক বছর অতিক্রমের পরেও স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি ও তাদের সমর্থকগন এখনো তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশমাতৃকার কথা না ভেবে যেসব রাজাকার, আলবদর, আলশামস পাকিস্তানিদের সাথে হাত মিলিয়েছিল বিএনপি তাদের সমর্থন দিয়ে দেশে সৃষ্টি করছে বিশৃঙ্খলা ও সংঘর্ষের। 

একাত্তরের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী হিসেবে দেশবাসীর কাছে ঘৃণিতবিএনপি স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে মিলেমিশে লাখো শহীদের পবিত্র রক্তে রঞ্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করে। একাত্তরের ঘৃণিত ও পরাজিত শক্তি হিসেবে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্বাধীনতা বিরোধীদের উত্থানের প্রধান শক্তি হলো বিএনপি। বিএনপি নেতা জেনারেল জিয়াউর রহমানের হাত ধরে প্রকাশ্যে বাংলাদেশের রাজনীতি করার সুযোগ পাওয়ার পর থেকে এসব পরাশক্তির  উত্থানের পিছনে মদদদাতা ও প্রধান শক্তিই হলো বিএনপি । অন্যদিকে বিএনপিরও অন্যতম শক্তির জায়গা হচ্ছে এই স্বাধীনতা বিরোধী কুচক্রী মহল  ও বিভ্রান্ত কিছু বাম শক্তি। যারা উভয়েই একাত্তরের সুমহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিরোধিতা করে পাকিস্তানী হানাদারদের সহযোগিতা করেছিল।এদের অতীতের একসাথে চলা ও আন্দোলন করা দেশবাসী দেখেছে।

একসাথে সরকারে থাকতে গ্রেনেড হামলা করে বিরোধী রাজনীতিকে শেষ করে দেয়া,দেশের ৬৩ জেলার পাঁচশ জায়গায় একসাথে বোমা হামলা করা, বাংলা ভাই সৃষ্টি করে দেশকে মৌলবাদী জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করা, সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন নির্যাতন করা অতীতে এই বিরোধী মহলরা একসাথেই করেছে। একসাথে আন্দোলনের নামে দেশব্যাপী আগুন সন্ত্রাস,জানমালের ক্ষতি করা,বিদেশে বসে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও লবিং করাও দেশের মানুষ দেখেছে।গনতান্ত্রিক বাংলাদেশে স্বাধীনতা বিরোধী বিএনপি আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নপূরন ব্যাহত করতে বদ্ধ পরিকর এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সমর্থন দিয়ে তারা আমাদের দেশ মাতৃকাকে অসম্মান করে চলেছে।  শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম নেতৃত্ব দানকারী প্রধান দল ও স্বাধীনতার স্ব পক্ষের বড় শক্তি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মীদের উপর হিংস্র ও উগ্র তৎপরতার মাধ্যমে প্রমাণ দিচ্ছে তারা স্বাধীনতা বিরোধী। লাখো শহীদের মহান আত্মত্যাগের মূল্য তাদের কাছে নিতান্তই তুচ্ছ। উপরন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্তমনা বাঙালিদের চিন্তা চেতনায় কালো বিভীষিকা ও হতাশা তৈরীতে তারা সবসময় উদগ্রীব। বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের মানচিত্র সম্মানে শোভা পেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাক সেটা তাদের ইচ্ছে নয়। তারা চায় এই স্বাধীন বাংলা আবারো কুচক্রী মহলের কাছে নিপীড়িত ও নির্যাতিত হোক এবং স্বাধীনতার সম্মান ধুলোয় লুন্ঠিত হোক।

যারা দেশ মাতৃকাকে ভালোবাসে,দেশের উন্নয়নের লক্ষ্য কাজ করে এবং দেশের আপামর জনসাধারণের কথা ভাবে তারা কখনোই এই গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে কোন স্বাধীনতা বিরোধী দের ঠাঁই দিতে পারেনা।স্বাধীনতা অর্জনের পরিপ্রেক্ষিতে যে স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন যার ফলশ্রুতিতে তার যোগ্য উত্তরাধিকারী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা সফলভাবে বাস্তবায়নে দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ। ইতিমধ্যে আমরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গিয়েছি। বর্তমান সময়ে তার একনিষ্ঠতা ও স্বচ্ছ পরিকল্পনার হাত ধরে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের স্বপ্নসমূহ বাস্তবায়িত হচ্ছে। একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশগড়ে তোলাসহ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা এবং উত্তরোত্তর সাফল্য পরিলক্ষিত হচ্ছে।দৃশ্যমান হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতার স্বপ্নের জয়গান এবং সেই বাংলাদেশ যার জন্য লাখো মানুষ তাদের জীবনের বিনিময়ে ছিনিয়ে এনে দিয়েছে স্বাধীনতা। স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করতে বাঙালি জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে সম্মিলিতভাবে শপথ নিতে হবে, সব ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একটি সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। সেই সাথে জাতিকে সোচ্চার থাকতে হবে সোনার বাংলা কলুষিত করা সকল কালো থাবার বিরুদ্ধে ।  

দেশরতœ শেখ হাসিনা নানাবিধ পরিকল্পনা মোতাবেক গ্রহণ  করেছেন। গ্রহণ করেছেন জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করণের নানা কার্যক্রম। ধারাবাহিকভাবে উন্নত হচ্ছে সকল ক্ষেত্র।এ অগ্রযাত্রায় উঠে আসে কম সময়ের মধ্যে কীভাবে বাংলাদেশ দ্রুতগতিসম্পন্ন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মতো সফলতা দেখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্ব, দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা, এমডিজি অর্জন, এসডিজি বাস্তবায়নসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, লিঙ্গ সমতা, কৃষি, দারিদ্র্যসীমা হ্রাস, গড় আয়ু বৃদ্ধি, রপ্তানীমূখী শিল্পায়ন, ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, পোশাক শিল্প, ঔষধ শিল্প, রপ্তানী আয় বৃদ্ধিসহ নানা অর্থনৈতিক সূচক। পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ দেশের মেগা প্রকল্পসমূহ।হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আর বিস্তৃত করতে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও দুঃস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃকালীন ভাতাসহ ভাতার হার ও আওতা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে। এদেশের জনগন বাস্তবতায় বিশ্বাসী।তারা দেখছে দেশের উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে আওয়ামীলীগ আমলে। তাই এদেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নিবে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে কি না?

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম